ক্ষনিকের অতিথি
(প্রথম খন্ড)
কর্ণেল মুখার্জ্জী পোশাকটা বদলে কাঁচের জানালা দিয়ে ঘেরা ঘরের ভেতর দাঁড়িয়ে পাইপটা ধরালেন। একটা সুখটান মেরে বাইরের দিকে তাকিয়ে দেখতে লাগলেন, শ্রাবণের ধারা কিভাবে ঝরছে। বৃষ্টির পরিমান-টা এতোটাই জোরে হচ্ছে যে, চারিদিক সাদা হয়ে গেছে। হাত ঘড়ির দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করে দেখলেন সময় বিকেল চারটে, বাইরের পরিবেশ দেখে মনে হচ্ছে রাত্রি বারোটা বাজে। এটাই তো পরিবেশের স্বাভাবিক নিয়ম যে,শ্রাবণ মাসে তুমুল বর্ষা হবে। রাস্তায় কোন জনমানব চোখে পরছে না, হটাৎ পেছন দিক থেকে হরেন এককাপ কফি এনে “বাবু আপনার কফি” কর্ণেল একগাল হেসে “দারুন টাইমে কফিটা এনেছিস” যেভাবে ভিজে গেছিলাম, এখন কফিটার প্রয়োজনীয়তা মারাত্বক”। রাতের বেলা কি খাবেন বাবু? কি আর খাবো “তুই আর আমি তো, চালে-ডালে চাপিয়ে দিবি। এমন বর্ষামূখোর পরিবেশের সঙ্গে ম্যাচিং করে খেতে হবে না।”
“ঠিক আছে” বলে হরেন দরজার বাইরে এক পা রাখতেই “হ্যাঁরে হরেন কোন ফোন এসেছিল? হরেন উত্তর দিলো”তা একটা এসেছিল বটে ঐ থানার বড় বাবু আপনার খোঁজ করছিলেন । “কেন? “ঐ কি একটা জরুরি ব্যাপারে আলোচনা করতে চান, আপনাকে ফোন করতে বলেছেন।
এবার কর্ণেল পাশে থাকা ইজিচেয়ারটায় আরাম করে বসে কফিতে একটা চুমুক দিলেন। তারপর পাইপে
আর একটা টান দিয়ে টেবিলের ওপরে রাখা টেলিফোনের রিসিভারটা কানে ধরে রিং করতে থাকলেন-“হ্যালো আপনি কি খয়ের খালি থানার বড় বাবু বলছেন? নমস্কার আমি কর্ণেল সিদ্ধার্থ মুখার্জ্জী কথা বলছি। ঠিকআছে-ঠিকআছে আর বেশি আতিথেয়তা দেখাতে হবে না, কি হয়েছে সেটাই বলুন? কি আপনার বাড়ির কেস, অচেনা একটা মহিলা হটাৎ ঘরে ঢুকে পরেছে? তা কি পরিচয় নিয়ে ঢুকলো, আপনি বা আপনার ওয়াইফ কোন রকম ভাবে চিন্তে পারছেন না?
আচ্ছা তার আগে বলুনতো মহিলাটি শিক্ষিত না অশিক্ষিত? ও কথা শুনে শিক্ষিত বলে মনে হচ্ছে।
তা আপনি এখন কি করতে চাইছেন, ও তাড়াতে চাইছেন। তা এই সামান্য ব্যাপারের জন্য আপনি আমার
স্মরণাপন্ন হতে চাইছেন কেন? যেখান আপনি নিজে একজন প্রশাসনের উচ্চ পদস্থ অফিসার। নো-নো
ইমপসেবেল এই পরিবেশে গরম-গরম খিচুরি খাওয়া ছাড়া আমার আর কোন কাজ করতে ভালো লাগছে না,
যা হবে কাল সকালে। আরে মশাই এক রাতে একটা মহিলা আপনার কি করবে শুনি?
তাহলে আপনি এতো ভয় পাচ্ছেন কেন? আপনার স্ত্রী কি বাপের বাড়ি গেছেন? ও বাড়িতেই আছেন। তাহলে তো আর আপনার রেপ হওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই। আ-হা রাগছেন কেন?
একটু রসিকতা করলাম আর কি। শুনুন মশাই এবার কাজের কথা শুনুন, একটা ফাঁকা ঘরে ভদ্রমহিলা কে
শুতে দিন দেখবেন সেই ঘরে যেন টাকা পয়সা মোবাইল ফোন না থাকে। তারপর কাল সকাল আটটার সময়
আমি থানায় যাচ্ছি। ও কে গুড নাইট।