২৬ মে থেকে কি ভারতে বন্ধ হয়ে যাবে ফেসবুক, টুইটার, ইনস্টাগ্রামের মতো সোশ্যাল মিডিয়া? সামাজিক মাধ্যমের স্বাধীনতায় রাশ টানতে চলতি বছরের ২৫ ফেব্রুয়ারি একগুচ্ছ নির্দেশিকা জারি করে ভারতের তথ্য ও প্রযুক্তি মন্ত্রক। তাতে ফেসবুক-টুইটার-ইনস্টার মতো সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্মগুলিকে একটি নির্দেশিকা পাঠানো হয়। আর সেই নির্দেশকা লাগু করার জন্য ২৬ মে পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়। তবে একমাত্র ভারতীয় কোম্পানি কু (Koo) ছাড়া কেউই কেন্দ্রের সেই নির্দেশিকার কোনও জবাব দেয়নি। Koo ইতিমধ্যেই নির্দেশকা মেনে কাজ করতে শুরু করেছে। আর এমন পরিস্থিতিতে আগামী ২৬ তারিখ ভারতে জনপ্রিয় সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্ম ফেসবুক-টুইটার-ইনস্টাগ্রাম বন্ধ হয়ে যাবে কিনা, সেটিই এখন লাখ টাকার প্রশ্ন।
সামাজিক মিডিয়ার অপপ্রয়োগ রুখতে এই গাইডলাইন তৈরী করে কেন্দ্র। এই গাইডলাইন না মানলে সোশ্যাল মিডিয়া সংস্থার বিরুদ্ধে অ্যাকশন নেওয়া হবে বলে স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ। গত ২৫ ফেব্রুয়ারি সোশ্যাল মিডিয়া কনন্টেন্টে রাশ টানতে জারি করা নির্দেশিকায় বলা হয়- ওটিটি প্ল্যাটফর্মের জন্য ত্রিস্তরীয় নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা নিয়ে আসা হচ্ছে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকর এবং রবিশঙ্কর প্রসাদ একটি সাংবাদিক বৈঠক করে সোশ্যাল মিডিয়া ও ওটিটি প্ল্যাটফর্মের নয়া গাইডলাইন নিয়ে বিস্তারিত বক্তব্য রাখেন। তাঁরা বলেন, ‘সোশ্যাল মিডিয়ায় আপত্তিজনক ভাষা যথেচ্ছ ভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে। তবে এখন থেকে আর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আপত্তিজনক বিষয়বস্তু সরকার অনুমোদন করবে না।’
কেন্দ্রের এই নয়া নির্দেশিকায় যে যে বিষয়ে আলোকপাত করা হয়, সেগুলি একনজরে দেখে নিন –
গ্রাহকের অভিযোগ সমাধানে ত্রিস্তরীয় পদ্ধতি –
1. এবার থেকে প্রত্যেক প্ল্যাটফর্মের জন্য অতি অবশ্যই অভিযোগ নিরসন প্রক্রিয়া থাকবে।
2. প্রত্যেক প্ল্যাটফর্মে একজন মুখ্য আধিকারিক থাকবেন এবং সেই আধিকারিককে ভারতের বাসিন্দা হতে হবে।
3. প্রত্যেক প্ল্যাটফর্মে যোগাযোগের জন্য একজন প্রধানকে নিয়োগ করতে হবে। আইনরক্ষকদের সঙ্গে তিনি সমন্বয় রেখে চলবেন।
4. প্রত্যেক মাসে প্রতিটা ওটিটি প্ল্যাটফর্মকে একটি সম্মতি রিপোর্ট দাখিল করতে হবে। কতগুলি অভিযোগ দায়ের হয়েছে এবং তার ভিত্তিতে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে – এই সবেরই খুঁটিনাটি তুলে ধরতে হবে সেই রিপোর্টে।
OTT প্ল্যাটফর্মে অভিযোগ পাওয়ার ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ব্যবস্থা নিতে হবে। আপত্তিজনক কনটেন্টের রিপোর্ট মিললে নির্দেশ পাওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তা সরিয়ে দিতে হবে বলে জানিয়েছে কেন্দ্র। সোশ্যাল মিডিয়ার ক্ষেত্রে বলা হয়েছে, কোনও ফেক নিউজ পরিবেশিত হলে যেই ব্যক্তি প্রথম পোস্ট করেছেন, তাঁর নাম পরিচয় প্রকাশ করতে হবে।
সব কনটেন্টকে বয়স ও বিষয় অনুযায়ী পাঁচ ভাগে ভাগ করতে হবে। সব বিষয় বা কন্টেন্টকে বয়স-ভিত্তিক পাঁচটি শ্রেণিতে বিভক্ত করতে হবে। সেগুলি হল — ‘ইউনিভার্সাল (ইউ)’, ‘ইউ/এ ৭+’, ‘ইউ/এ ১৩+’, ‘ইউ/এ ১৬+’, ও ‘প্রাপ্তবয়স্ক’। শেষ তিন শ্রেণির জন্য রাখতে হবে পেরেন্টাল লক (Parental Lock) ।