ফের এক নক্ষত্রপতন বাংলা চলচ্চিত্র জগতে। প্রয়াত পরিচালক বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত। বৃহস্পতিবার সকালে নিজের বাসভবনে স্বনামধন্য এই পরিচালকের মৃত্যু হয়। বেশ কিছুদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন তিনি। কিডনি ও বার্ধক্যজনিত সমস্যায় ভুগছিলেন। ডায়ালিসিস চলছিল তাঁর। এদিন ভোর ছটায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। বিশিষ্ট পরিচালকের মৃত্যুতে বিনোদুনিয়ায় শোকের ছায়া। শোকপ্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও।
তাহাদের কথা (Tahader Katha),উত্তরা (Uttara),গৃহযুদ্ধ (Grihajuddha),বাঘ বাহাদুর (Bagh Bahadur),মন্দ মেয়ের উপাখ্যান(Mondo Meyer Upakkhyan),জানালা (Janala), আমি ইয়াসিন আর আমার মধুবালা (Aami Yasin ar Amar Madhubala),চরাচর (Charachar) প্রভূত ছবিতে তিনি যেন বাস্তবেরই ছবি এঁকেছেন।
এই ছবিগুলির মধ্যে ‘বাঘ বাহাদুর’ সেরা জাতীয় ফিচার ফিল্ম-১৯৮৯),’তাহাদের কথা’ জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত বাংলা ফিচার ফিল্ম-১৯৯৩ সম্মানে ভূষিত হয়। ‘দূরত্ব’ তাঁর প্রথম পূর্ণ দৈর্ঘ্যের ছবি।। পুরস্কার তালিকা দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর।।২০০০ ও ২০০৫ সালে যথাক্রমে ‘উত্তরা’ ও ‘স্বপ্নের দিন’ সিনেমার জন্য পান সেরা জাতীয় পরিচালকের পুরস্কার।। ২০০৮ এ স্পেনে আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে “Lifetime Achievement “সম্মান।
এথেন্স আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে গোল্ডেন অ্যাওয়ার্ড, বার্লিন আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে গোল্ডেন বিয়ার পুরস্কার সহ অজস্র সম্মানে ভূষিত হয়েছেন। কবিতার মধ্যে রয়েছে-“গভীর আড়ালে”,”কফিন কিম্বা সুটকেস”,”রোবটের গান” ইত্যাদি। পুরুলিয়ার আনাড়ায় জন্ম প্রখ্যাত চিত্র পরিচালক বুদ্ধদেব দাশগুপ্তের। এক কথায় সিনেমা জগতের “ইন্দ্রপতন”।
তাঁর ছবিতে মিঠুন চক্রবর্তী, মমতা শঙ্কর, প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়দের নতুন ভাবে উপলব্ধি করেছিল বাঙালি। তাঁর মৃত্যুতে বাংলা চলচ্চিত্র জগতে নেমেছে শোকের ছায়া।
অভিনেত্রী শ্রীলেখা মিত্র ভেঙে পড়েছে বুদ্ধদেব দাশগুপ্তের প্রয়াণে। তিনি বললেন, “দেশ ও পৃথিবীর জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি। আমি ওনার সঙ্গে কাজ করে অনেক কিছু শিখেছি। সত্যি শেখার মত এক অভিজ্ঞতা। একজন প্রকৃত শিক্ষক উনি। যা ভবিষ্যতে আমায় এগিয়ে নিয়ে যাবে। উনি একজন বাম সমর্থক ছিলেন। বিরোধিতা করার মানুষের সংখ্যা দিন দিন কমে যাচ্ছে, কিন্তু উনি অন্যায় দেখলে বিরোধিতা করতেন। আর উনি যে একজন দক্ষ পরিচালক এ কথা তো বলাই বাহুল্য। নিঃসন্দেহে এ এক অপূরণীয় ক্ষতি।”