33 C
Kolkata
33 C
Kolkata
বৃহস্পতিবার, মার্চ 30, 2023

দাঁতের ব্যথা কমানোর উপায় কি ? দাঁত ব্যাথা হলে কি করতে হবে ?

দাত থাকলে ব্যাথা থাকবে, মাথা থাকলে ব্যাথা থাকবে। তাই বলে হা হুতাশ করে লাভ নেই। দাঁত ও মাড়ির বিভিন্ন ধরণের সমস্যার কারণে হতে পারে দাঁত ব্যথা। যেমন- ক্যাভিটি, মাড়ির সমস্যা, দাঁতে ইনফেকশন, দাঁত দিয়ে রক্ত পরা, দাঁতের গোঁড়া আলগা হয়ে যাওয়া ইত্যাদি। পাশাপাশি, দাঁতের যথাযথ যত্ন ও সুরক্ষার অভাবেও দাঁতের সমস্যা দেখা দিতে পারে। আর তখনই শুরু হয় ব্যথা। যেকোনো ব্যক্তির যেকোনো সময় দেখা দিতে পারে এ সমস্যা। তবে সুষ্টু চিকিৎসায় আরোগ্য সম্ভব।

– দাঁত ব্যাথার কারন –

১) দৈনন্দিন খাবারের কিছু অংশ দাতের ফাঁকে জমে থাকার কারনে মুখের মধ্যে থাকা  ব্যাকটেরিয়ার সংস্পর্শে তা এক প্রকার প্লাক সৃষ্টি করে। যা আস্তে আস্তে কঠিন হতে থাকে। এক পর্যায়ে দাত ব্রাশ করেও তা অপসারন করা যায় না। এতে দাতের মধ্যবর্তি স্থানে মাড়িতে প্রদাহ (Inflammation) হয়ে ফুলে যায় এবং রক্ত পড়া শুরু হয়। প্রথম যাত্রায় কম অনুভূত হলেও  ধীরে ধীরে তা অসহ্য ব্যাথার কারন হয়ে দাড়ায়।

২) দন্তক্ষয় বা ডেন্টাল ক্যারিজ এর কারণে সৃষ্ঠ রোগ, পালপাইটিস ও আক্কেল দাঁত বা উইজডম দাঁতের অসমান অবস্থানের কারণে, মুখের ভিতরের বিভিন্ন ধরণের ক্ষতের কারনে ব্যথার কারণ হতে পারে

৩) উইজডম দাঁত বা আক্কেল দাঁতের বেপরোয়া অবস্থান বা বাঁকা অবস্থানের কারনে পাশের দাঁতের উপর চাপ সৃষ্টি করে প্রদাহ সৃষ্টি করে।

৪) রক্তশূন্যতা, হিমোফিলিয়া, পারফিউরা, ক্যানসার, এমনকি কিছু ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াতেও মাড়ি দিয়ে রক্ত পড়তে দেখা যায় এবং দাতে ব্যাথা অনুভুত হয়।

৫) অপুষ্টিজনিত কারণে যেমন, ভিটামিন ‘সি’র অভাবে মাড়ি দিয়ে রক্তক্ষরণ হতে পারে। এতে দাতের গোড়া দূর্বল হয়ে পড়ে দাত নড়ে গিয়েও দাত ব্যাথার কারন হতে পারে।

৬) মায়েদের গর্ভাবস্থায় হরমোনের সমস্যাজনিত কারনে মাড়ি থেকে রক্তক্ষরণ হতে দেখা যায় এবং ব্যথা অনুভুত হতে পারে। তবে এক্ষেত্রে তেমন সমস্যার সৃষ্টি করে না। সন্তান জন্ম নেয়ার পর বেশিরভাগই সুস্থ হয়ে যায়।

ঘরোয়া চিকিৎসা : ঘরোয়া উপায়ে সহজেই দাঁত ব্যথা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। আসুন জেনে নেই সেই উপায়গুলো সম্পর্কে। 

লবঙ্গ-

এটি দাতের একটি মহৌষধ। ব্যথার স্থানে একটা লবঙ্গ ব্যাথা না কমা পর্যন্ত রাখুন। আরও ভাল ফলাফলের জন্য লবঙ্গ চূর্ণের সঙ্গে পানি বা অলিভ অয়েল মিশিয়ে পেস্ট বানিয়েও ব্যাথার স্থানে লাগাতে পারেন।

পেঁয়াজ-
দাতের ব্যাথার স্থান নির্ধারণ করে পেয়াজ কাটা আক্রান্ত স্থানে চিবাতে থাকুন যদি চিবাতে কষ্ট অনুভুত হয় তাহলে কাটা পেয়াজ ব্যাথার স্থানে রাখুন। পেঁয়াজের অ্যান্টিসেপ্টিক উপাদান দাঁতের জীবাণু নষ্ট করে দাঁতের ব্যথা উপসমে সহায়তা করে।

উষ্ণ লবণ জল –

এক গ্লাস হালকা গরম জলে লবন মিশিয়ে বেশ কয়েকবার কুলি করতে থাকুন। এতে দাতের টিস্যু সচল হয়ে উঠবে। জীবাণুর কারণে দাঁতের ব্যথা হলে তা কমে যাবে। মাড়িতে রক্ত চলাচল বাড়ার কারণে সাময়িকভাবে ব্যাথা কমে আসবে।

রসুন-
রসুনের এন্টিবায়োটিক উপাদান যা বিভিন্ন রোগ প্রতিষেধক হিসাবে কাজ করে। তেমনি দাঁতের সংক্রমণ জনিত ব্যথায়ও যথেষ্ট কাজ দেয়। একটি রসুন থেতো করে তাতে পরিমান মত লবন মিশিয়ে আক্রান্ত স্থানে লাগিয়ে দিন। ব্যাথা কমে গিয়ে আরামবোধ করবেন।

ব্যাথানাশক ক্যাপসুল –

ব্যাথানাশক ট্যাবলেট যেমন ডকসিন ক্যাপসুল আক্রান্ত বা ব্যাথার স্থানে দাত দিয়ে চিবিয়ে রাখুন কিছুক্ষন পর ব্যাথা কমে যাবে।

পেয়ারা পাতা –

দাঁতের ব্যথায়  পেয়ারা পাতা পরীক্ষিত।  ২/৩ টা কচি পেয়ারা পাতা পরিষ্কার পানিতে ধুয়ে দাত দিয়ে চিবোতে থাকুন। কিছুক্ষন পর দেখা যাবে দাঁতের ব্যথায় কাজ শুরু না করে দিয়েছে। তাছাড়া পেয়ারা পাতা গরম জলে সিদ্ধ  করে পানি ঠান্ডা করে কুলকুচি করতে থাকুন। দেখবেন ব্যাথা অনেকাংশে কমে গেছে।

শেষ কথা –

ঘরোয়া চিকিৎসায় ফলাফল যতই আমাদের অনুকুলে থাকুক না কেন, মনে রাখতে হবে দাতের রোগ খুবই স্পর্ষকাতর। যথাযথ চিকিৎসা না হলে বড় ধরনের সংক্রমন হতে পারে। নিয়মিত খ্যাদ্যাভ্যাস গড়ে তুলতে হবে এবং সঠিক নিয়মে ব্রাশ করতে হবে। দাতের গোড়ায় পাথর জমলে একজন অভিজ্ঞ ডেন্টিস্টের কাছ থেকে দাঁত স্কেলিং করিয়ে নেওয়া উচিত। চিকিৎসকের পরামর্শ মতে জানা যায়, সুস্থ দাতের জন্য বছরে ২/১ বার দন্তবিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহন অবশ্যই দরকার।

- Advertisement -spot_img

Latest news

- Advertisement -spot_img

Related news

- Advertisement -spot_img

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.