মনে হচ্ছে এবার করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের ভয়াবহতা কাটিয়ে উঠতে চলেছে দেশ। পরপর কয়েকদিন ধরেই কমছে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা। এদিন মৃত্যুর সংখ্যাও নেমে এসেছে ৪ হাজারের নিচে।
রবিবার কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের দেওয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় গোটা দেশে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ২ লক্ষ ৪০ হাজার ৮৪২ জন। শনিবারের তুলনায় আক্রান্তের সংখ্যা এদিন অনেকটাই কম। শনিবার ২ লক্ষ ৫৭ হাজার ২৯৯ জন আক্রান্ত হয়েছিলেন। আর এদিন আক্রান্তের সংখ্যা নেমে এল আড়াই লক্ষের নিচে। গত ২৪ ঘণ্টায় মৃতের সংখ্যাও কমেছে। শনিবার যেখানে ৪ হাজার ১৯৪ জনের মৃত্যু হয়েছিল সেখানে রবিবারের রিপোর্ট বলছে গত ২৪ ঘণ্টায় ৩ হাজার ৭৪১ জনের মৃত্যু হয়েছে।
মৃতের সংখ্যা কমেছে সাড়ে ৪ হাজারেরও বেশি। আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা কম হওয়া নিঃসন্দেহে আশার জাগিয়েছে দেশবাসীর মনে। তবে গতকালের চেয়ে এদিন সুস্থতার হারও সামান্য কমেছে। শনিবার ৩ লক্ষ ৫৭ হাজার ৬৩০ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গিয়েছিলেন। আর রবিবার সুস্থ হয়েছেন ৩ লক্ষ ৫৫ হাজার ১০২ জন। তবে দৈনিক আক্রান্তের থেকে এদিনও সুস্থতার সংখ্যা অনেকটাই বেশি।
এদিকে দেশে কমছে সক্রিয় করোনা আক্রান্তের সংখ্যাও। এই মুহূর্তে ভারতে সক্রিয় করোনা রোগীর সংখ্যা ২৮ লাখ ৫ হাজার ৩৯৯ জন। দেশে এখনও পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ২ কোটি ৬৫ লাখ ৩০ হাজার ১৩২ জন। তাঁদের মধ্যে করোনাকে হারিয়ে সুস্থ হয়ে উঠেছেন ২ কোটি ৩৪ লাখ ২৫ হাজার ৪৬৭ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ২ লাখ ৯৯ হাজার ৩৯৯ জনের। অন্যদিকে করোনা সংক্রমণ রুখতে টিকাকরণে জোর দিচ্ছে কেন্দ্র সরকার। এখনও পর্যন্ত টিকা পেয়েছেন ১৯ কোটি ৫০ লাখ ৪ হাজার ১৮৪ জন দেশবাসী।
শুধু তাই নয়, কেন্দ্র লাগাতার দৈনিক করোনা পরীক্ষার সংখ্যাও বাড়াচ্ছে। শনিবারও ২১ লক্ষের বেশি মানুষের করোনা পরীক্ষা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, করোনা ভ্যাকসিনের দুটি ডোজের মাঝের সময়ের ব্যবধান নিয়ে বিশ্বজুড়ে বিতর্ক চলছে। তবে দুটি ডোজের মধ্যেকার সময়ের ব্যবধান যত বেশি হবে ততই ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা বাড়বে বলে দাবি অধিকাংশ বিজ্ঞানীর। সম্প্রতি এক গবেষণায় প্রকাশিত, কোভিড ভ্যাকসিনের দুটি ডোজের মাঝের সময়ের ব্যবধান বাড়লে মারণ ভাইরাসের বিরুদ্ধে তার লড়াইয়ের কার্যকারিতা ২০ শতাংশ থেকে ৩০০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে যেতে পারে।নয়া গবেষণার এই তথ্য অনুযায়ী প্রথম সেই পথে হাঁটা শুরু করেছে সিঙ্গাপুর। সেখানে ইতিমধ্যে করোনা ভ্যাকসিনের দুটি ডোজের মাঝের সময়ের ব্যবধান তিন-চার সপ্তাহ থেকে বাড়িয়ে ছয়-আট সপ্তাহ করা হয়েছে।
এর ফলে ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা বাড়ার পাশাপাশি অন্তত সমস্ত বয়স্কদের ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ দেওয়ার লক্ষ্যে পৌঁছতে পেরেছে সিঙ্গাপুর। ভারত অবশ্য সিঙ্গাপুরকেও ছাপিয়ে গিয়েছে। সম্প্রতি ভ্যাকসিনের দুটি ডোজের মাঝের সময়ের ব্যবধান ১২ থেকে ১৬ সপ্তাহ করেছে। অন্যান্য অধিকাংশ দেশ-ই তুলনামূলক কম-বেশি করে করোনা ভ্যাকসিনের দুটি ডোজের মাঝের সময়ের ব্যবধান বাড়িয়েছে।