হনুমান চালিশা (বাংলা )
শ্রী গুরু চরণ পদ্ম স্মরি মনে মনে ।
কোটি কোটি প্রনমিনু তাহার চরণে ।।
শ্রীরামের চরণ পদ্ম করিয়া স্মরণ ।
চতুর্বর্গ ফল যাহে লভি অনুক্ষণ ।।
বুদ্ধিহীন জনে ওহে পবন কুমার ।
ঘুচাও মনের যত ক্লেশ ও বিকার ।।
জয় হনুমান জ্ঞান গুনের সাগর ।
জয় হে কপিশ প্রভু কৃপার সাগর ।।
শ্রীরামের দুত অতুলিত বলধাম ।
অঞ্জনার পুত্র পবন পুত্র নাম ।।১।।
মহাবীর বজরঙ্গী তুমি হনুমান ।
কুমতি নাশিয়া কর সুমতি প্রদান ।।২।।
কাঞ্চন বরন তব তুমি হে সুরেশ ।
কর্ণেতে কুণ্ডল শোভে কুঞ্চিত কেশ ।।৩।।
হাতে ব্জ্র তব আর ধ্বজা বিরাজে ।
সুন্দর গদাটি কাঁধে তোমার যে সাজে ।।৪।।
অপরূপ বাহু তব পবন নন্দন ।
মহাতেজ ও প্রতাপ জগত বন্দন ।।৫।।
বিদ্যাবান গুণবান তুমি হে চতুর ।
শ্রীরামচন্দ্রের কার্যে তুমি হে আতুর ।।৬।।
সর্বদা রামের আজ্ঞা করিতে পালন ।
হৃদে রাখ সদা রাম সীতা ও লক্ষ্মণ ।।৭।।
সূক্ষ্মরূপ ধরি তুমি লঙ্কা প্রবেশিলে ।
ধরিয়া বিকট রূপ লঙ্কা দগ্ধ কৈলে ।।৮।।
ভীম রূপ ধরি তুমি অসুর সংহর।
শ্রীরাম চন্দ্রের তুমি সর্ব কাজ কর ।।৯।।
সঞ্জীবন আনি তুমি বাঁচালে লক্ষ্মণ ।
রঘুবীর হন তাহে আনন্দিত মন ।।১০।।
রঘুনাথ দিলা তোমা আলিঙ্গন দান ।
কহিলেন তুমি ভাই ভরত সমান ।।১১।।
সহস্র বদন তব গাবে যশ খ্যাতি ।
এত বলি আলিঙ্গন করেন শ্রীপতি ।।১২।।
সনকাদি ব্রহ্মাদি যতেক দেবগণ ।
নারদসারদ আদি দেব ঋষি গণ ।।১৩।।
যম ও কুবের আদি দিকপালগনে ।
কবি ও কোবিদ যত আছে ত্রিভুবনে ।।১৪।।
সুগ্রিবের উপকার তুমি যে করিলে ।
রাম সহ মিলাইয়া রাজপদ দিলে ।।১৫।।
তোমার মন্ত্রণা সব বিভীষণ মানিল ।
লঙ্কেশ্বরের ভয়ে সবে কম্পমান ছিল ।।১৬।।
সহস্র যোজন উর্দ্ধে সূর্য দেবে দেখে ।
সুমধুর ফল বলি ধাইলে গ্রাসিতে ।।১৭।।
জয় রাম বলি তুমি অসীম সাগর ।
পার হয়ে প্রবেশিলে লঙ্কার ভিতর ।।১৮।।
দুর্গম যতেক কাজ আছে ত্রিভুবনে ।
সুগম করিলে তুমি সব রাম গানে ।।১৯।।
চিরদ্বারী আছ তুমি শ্রীরামের দ্বারে ।
তব আজ্ঞা বিনা কেহ প্রবেশিতে নারে ।।২০।।
শরণ লইনু প্রভু আমি যে তোমারি ।
তুমিই রক্ষক মোর আর কারে ডরি ।।২১।।
নিজ তেজ নিজে তুমি কর সম্বরণ ।
তোমার হুংকারে দেখ কাঁপে ত্রিভুবন ।।২২।।
ভুত প্রেত পিশাচ কাছে আসিতে না পারে ।
মহাবীর তব নাম যেইজন স্মরে ।।২৩।।
রোগ নাশ কর আর সর্ব পীড়া হর ।
মহাবীর নাম যেবা স্মরে নিরন্তর ।। ২৪।।
সঙ্কটেতে হনুমান উদ্ধার করিতে ।
তোমার চরণে যেবা মন প্রান দিবে ।।২৫।।
সর্বপরি রামচন্দ্র তপস্বী ও রাজা ।
শ্রীরামের অরিগনে তুমি দিলে সাজা ।।২৬।।
তোমার চরণে যেবা মন প্রান দিবে ।
এ জীবনে সেই জন সদা সুখ পাবে ।।২৭।।
প্রবল প্রতাপ তব হে বায়ু নন্দন ।
চার যুগ উজ্জ্বল রহিবে ত্রিভুবন ।।২৮।।
সাধু সন্ন্যাসিরে রক্ষা কর মতিমান ।
শ্রীরামের প্রিয় তুমি অতি গুণবান ।।২৯।।
অষ্টসিদ্ধি নবসিদ্ধি যাহা কিছু রয় ।
সকলই সিদ্ধ হয় তোমার কৃপায় ।।৩০।।
রাম রামায়ণ আছে তব নিকটেই ।
শ্রীরামের দাস হয়ে রয়েছ সদাই ।।৩১।।
তোমার ভজন কৈলে রামকে পাইবে ।
জনমে জনমে তার দুঃখ ঘুচে যাবে ।।৩২।।
অন্তকালে পাবে সেই রামের চরণ ।
এই সার কথা সব শুন ভক্তগণ ।। ৩৩।।
সব ছাড়ি বল সবে জয় হনুমান ।
হনুমন্ত সর্ব সুখ করিবে প্রদান ।।৩৪।।
সর্ব দুঃখ দূরে যাবে সঙ্কট কাটিবে ।
যেইজন হনুমন্তে স্মরণ করিবে ।।৩৫।।
জয় জয় জয় জয় হনুমান গোঁসাই ।
তব কৃপা ভিন্ন আর কোন গতি নাই ।। ৩৬।।
যেই জন শতবার ইহা পাঠ করে ।
সকল অশান্তি তার চলে যায় দূরে ।।৩৭।।
হনুমান চলিশা যে করে পঠন ।
সর্বকার্য্যে সিদ্ধি লাভ করে সেই জন ।।৩৮।।
তুলসীদাস সর্বদাই শ্রী হরির দাস ।
মনের মন্দিরে প্রভু কর সদা বাস ।।৩৯।।
পবন নন্দন , সঙ্কট হরণ ,
মঙ্গল মুরতি রূপ ।
শ্রী রাম লক্ষ্মণ , জানকী রঞ্জন ,
তুমি হৃদয়ে ভুপ ।।৪০।।
পবন নন্দন , প্রবল বিক্রম ,
রাম অনুগত অতি ।
চালিশা হেথায় , সমাপন হয় ,
পদে থাকে যেন মতি ।।
– ইতি শ্রীহনুমান চালিশা –