১০৪ বছরের পুরনো নিয়ম ভাঙলো ভারত সেবাশ্রম সংঘ (Bharat Sevashram Sangha)। শুধুমাত্র করোনা (Corona Virus) রোগীদের জন্য। ১৯১৭ সালে আচার্য শ্রীমত স্বামী প্রণবানন্দজি মহারাজ প্রতিষ্ঠিত এই আশ্রমে আমিষ খাবারের প্রবেশ নিষেধ। প্রতিষ্ঠার পর থেকে আজ পর্যন্ত কোনওদিন একটুকরো মাছ, মাংস কিংবা ডিম ঢোকেনি সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে থাকা আশ্রমের কোনও শাখায়। কিন্তু এবার সেই আশ্রমেই তৈরি হচ্ছে ডিম সেদ্ধ, মুরগির স্যুপ। স্বামীজিরা বলছেন, এটা কোভিড (COVID-19) রোগীদের জন্য। মানবসেবার কাছে হার মানল ধর্মীয় অনুশাসন।
করোনা আক্রান্তদের জন্যে সেফ হোম চালু করেছে ভারত সেবাশ্রম সংঘ। ভারত সেবাশ্রম সংঘের উদ্যোগে গড়িয়া শাখায় করোনা রোগীর জন্য সেফ হোমের ব্যবস্থার পাশাপাশি জোকায় অত্যাধুনিক হাসপাতালে CCU ও ভ্যান্টিলেশনের ও ব্যবস্থা করা হয়েছে। নিরলসভাবে কাজ চালিয়ে যাচ্ছি।
শুক্রবার গড়িয়া প্রণব নগরের ভারত সেবাশ্রম সংঘের দু’টি তলা কোভিড হাসপাতালে রূপান্তরিত হয়েছে। প্রথমে হাসপাতালে ২৫টি বেড থাকার কথা ছিল। কিন্তু মানুষের চাহিদার কথা ভেবে আরও ৫টি বেড বেড়েছে গড়িয়া ভারত সেবাশ্রম সংঘে। ৩০ বেডের এই কোভিড হাসপাতালে ২০ টি বেডে রয়েছে অক্সিজেনের সুবন্দোবস্ত। শরীরে অক্সিজেন স্যাচুরেশন ৮৫ এর বেশি, অথচ নানারকম কো-মর্বিডিটির কারণে রোগীকে বাড়িতে রাখা ঝুঁকির। সর্বক্ষণের পর্যবেক্ষণ দরকার। এমন রোগীদেরই ভরতি করা হচ্ছে এই হাসপাতালে। যাঁর উদ্যোগে গড়ে উঠল এই হাসপাতাল, তিনি এই আশ্রমেরই প্রাক্তন ছাত্র রাজীব দত্ত।
নিয়ম মতোই করোনা রোগীদের জন্য প্রোটিন যুক্ত খাবার দরকার। চিকিৎসকদেরও পরামর্শ, রোজ কিছুটা পরিমাণ প্রোটিন রাখতেই হবে খাদ্য তালিকায়। ফলে ডিম, মাংস, মাছ মতো খাবার খুবই প্রয়োজন। সে কারণেই এই সিদ্ধান্ত।
হাসপাতাল খোলার খবর পেয়েই দূর দূরান্ত থেকে ছুটে আসছেন রোগীরা। ইতিমধ্যেই ৩ জন রোগী ভরতি হয়ে গিয়েছেন। হাসপাতালে ২৪ ঘণ্টার জন্য রয়েছেন দু’জন চিকিৎসক, চারজন নার্স এবং সেবাশ্রমের ১২ জন স্বেচ্ছাসেবক। অ্যাথেনা এডুকেশনাল অ্যান্ড ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট এর সঙ্গে সহযোগিতায় গড়ে উঠেছে এই ৩০ শয্যার কোভিড কেয়ার ফেসিলিটি।