পরের বার ভালোবাসলে কোনো পাহাড়কেই ভালোবাসবো! যাকে একবার ভালোবাসি বললে সে বলবে ;
ভালোবাসি ভালোবাসি ভালোবাসি!!
পাহাড়ে ঘুরতে গেলে সত্যি পাহাড়ের সঙ্গে অচিরেই একটা সম্পর্ক তৈরি হয়ে যায় আমাদের। আদিম সবুজে মিশে চুপটি করে বসে থাকতে ইচ্ছে করে। আবার কখনো পাহাড়িয়া স্বপ্নে কুয়াশায় ভিজে খালি ছুটে বেড়াতে ইচ্ছে করে। পাইনের গা বেয়ে আসা নীলচে কুয়াশা আপনার মনে হবে-যদি পরি বলে কিছু থাকে তাহলে তারা বোধ হয় এখানেই থাকে।
কুইন অফ হিলস বলা হয় মুসৌরীকে। মুসৌরীর সব থেকে আকর্ষণীয় Kempti Falls আর সহস্র ধারা। কিন্তু মুসৌরী থেকে মাত্র ৪৪ কিলোমিটার দূরেই আছে সেই স্বপ্নে দেখা কুয়াশা ঘেরা পাইন নগরী ধনৌলটি।
মুসৌরীর এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেছিলেন “khamoshi me pahar ki khoobsurti mehsus karne ke liye ek bar Dhanaulti hoke aaiye” ।
মুসৌরী থেকে ধনৌলটি পৌঁছতে সময় লাগে ১ ঘন্টা মত, মুসৌরী থেকে ছাম্বা ‘হয়ে তেহরির দিকে গিয়েছে। সেই রাস্তা বরাবর মুসৌরী আর ছাম্বার ঠিক মাঝামাঝি জায়গায় ছোট্ট পাহাড়ি গঞ্জ ধনৌলটি।
এই পথ বেশ সংকীর্ণ, এডভেঞ্চারাস ও বটে, কিছু এলাকা ধ্বসপ্রবন আর কুয়াশার দাপটে গাড়ি বেশ আসতে চালাতে হয়। একপাশে অতল খাদ, কুয়াশা এত ঘন যে রাস্তার বাঁক বোঝা যায় না। বাঁক গুলোর মুখে এসে মনে হয় রাস্তা যেন এখানেই শেষ।
ধনৌলটি থেকে দেখা যায় সুবিস্তৃত পর্বতশ্রেণী, তার একদম ডানদিকে নন্দাদেবী থেকে শুরু করে বাঁদিকে বদর পুঞ্জ ও স্বর্গা রোহিণী।
মাঝে মাঝে কত চেনা অচেনা তুষারাবৃত শৃঙ্গ দেখতে দেখতে চোখ জুড়িয়ে যায়।হিমালয়ের ঘন alpine এর জঙ্গলে ঘেরা ধনৌলটি, একটু বেলা গড়ালেই পাহাড়ের গা বেয়ে নেমে আসে কুয়াশা।
সুরখন্দা দেবীর মন্দির
ধনৌলটি পৌঁছেই আপনাকে চলে যেতে হবে সুরখন্দা দেবীর মন্দিরে। স্থানীয় মানুষেরা এই দেবীকে খুব মানে, শ্রদ্ধা করে। শরৎকালে এখানে গঙ্গা দশেরার সময়ে বিশাল উৎসব পালিত হয়, পাহাড়ি মেলার আসর বসে এখানে। একটি আশ্চর্যের তথ্য হল প্রতি বছর প্রথম তুষারপাতও নাকি সবসময়ে মন্দির সংলগ্ন এলাকাতে হয়। Chamba-ধনৌলটি-
মুসৌরীর কোথায় না বরফ পেলেও এখানে বরফের খোঁজ অবশ্যই পাবেন।
ইকো পার্ক
এখানে পা দিলেই আপনার মনে হবে আলো আঁধারির জগতে প্রবেশ করলেন। এরকম দৃশ্য তো সিনেমার পর্দাতেই হয় বা হয়তো স্বপ্নে দেখেছেন বহুবার। ঘন দেবদারু গাছের সারির মাঝে ঘন কুয়াশার চাদর আর উঁচু পাইন গাছের ফাঁক দিয়ে আবছা আলো; ঠিক যেন ক্যানভাস আঁকা। মানুষের ভিড় কোলাহল এখানে বহু আলোকবর্ষ দূরে। শব্দ বলতে এখানে শুধু বুশ রবিন আর laughing thrush এর কূজন।আরও বেশ কিছুদূর এগিয়ে গেলে পাবেন গহন জঙ্গল। খুব ইচ্ছে করবে ওই মোটা গাছের গুঁড়ির আড়ালে আপনার প্রিয় মানুষটির সঙ্গে লুকোচুরি খেলতে।
তপোবন
যেখানে মর্তলোকে নেমে আসে পরীর দল- অবাক হলেন তাই তো ইকো পার্ক থেকে বেরিয়ে গিয়ে বাঁ দিকে একটা সরু পাহাড়ি রাস্তা বেয়ে চলে যায় তপোবন এর উদ্দেশ্যে। তপোবন পূর্ণিমার রাতে জ্যোৎস্নার আলোতে জায়গাটির অপরূপ রূপ যেন ঝড়ে পরে। এখানকার সরল মানুষদের বিশ্বাস প্রত্যেক চাঁদনী রাতে এখানে নাকি পরীর দল নেমে আসে, এই জায়গাটি নাকি ভীষণ পবিত্র ;এখানে যা মানত করা হয় তাই নাকি পাওয়া যায়।
এই অপরূপ বরফরাজ্যে গিয়ে মজা উপভোগ করতে হলে জানুয়ারি মাসে ঘুরতে যেতে পারেন কারণ তখন পুরো বরফের চাদরে ঢাকা থাকে ধনৌলটি। এছাড়া অক্টোবর মাসেও যেতে পারেন এতে উৎসবমুখর ধনৌলটিকে দেখতে পাবেন আপনারা।