25 C
Kolkata
25 C
Kolkata
বৃহস্পতিবার, মার্চ 30, 2023

পর্নোগ্রাফির নেশা আপনাকে মানসিক বিকারগ্রস্ত করে তুলতে পারে, সমাজবিরোধী ও করে তুলতে পারে!

কোটি কোটি ডলারের ব্যবসা করে নর-নারীর উদ্দাম যৌনতার নগ্ন ছবি। কিশোর থেকে প্রৌঢ়, নারী-পুরুষ নির্বিশেষে এর দর্শকের সংখ্যা কোটি কোটি।

আগে দেখা হত লুকিয়ে চুরিয়ে। এখনও দেখা হয় লুকিয়ে চুরিয়ে। কিন্তু আগে দেখার সুযোগ খুব কম ছিল। বরং বটতলার নিষিদ্ধ বই ছিল সস্তা এবং হাতের নাগালে। সঙ্গীহীন একাকী জীবনের বিনোদন বলতে এটাই ছিল তখন কম পয়সার বিলাসিতা। এখন ঘরে ঘরে ইন্টারনেট। ফ্রি ওয়াই ফাই। হাতে স্মার্ট মুঠোফোন। ফলে যখন খুশি তখনই নিষিদ্ধ দুনিয়ায় ঝাঁপ দেওয়া যায়। কেউ কিচ্ছু বলবে না। খুব বেশি লুকানোর ঝামেলা নেই। কারণ স্মার্টফোন যার যার ব্যক্তিগত। আওয়াজ বন্ধ করতে কানে হেডফোন। তারপর স্ক্রিনের থেকে চোখ সরে না। আর প্রযুক্তির এই আধুনিকতার সঙ্গে সঙ্গে বিশ্বজুড়ে পর্ণগ্রাফির বাজারের বেজায় রমরমা।

একদিকে নগ্ন শরীর প্রদর্শন করে লক্ষ লক্ষ টাকা উপার্জন করেন অভিনেতা অভিনেত্রী এবং কলাকুশলীরা। অন্যদিকে দর্শকও এসব দেখতে খরচ করতে পিছপা হন না। এ এক ধরনের নেশা। এই নেশা থেকে বেরিয়ে আসা বেশ কঠিন। আর এই নেশা যদি একবার আপনাকে চেপে ধরে তাহলে সর্বনাশের হাত থেকে আপনাকে কেউ বাঁচাতে পারবে না। মদ, গাঁজা, সিগারেট, ড্রাগ কোনো কিছুর থেকেই এই নেশার ক্ষতি কম নয়।

পর্নোগ্রাফির নেশা একবার ধরলে মানসিকভাবে অবসাদগ্রস্ত হতে শুরু করে মানুষ। সকলের থেকে একা হয়ে যেতে থাকে। মানসিক বিকার দেখা দেয়। পর্নোগ্রাফি কম বেশি অনেকেই দেখেন। তবে তা বলে সবাই কিন্তু নেশাগ্রস্ত নন। সামান্য বিনোদনের জন্য মাঝে মধ্যে দেখা আর নিত্যদিন দেখার অভ্যাস তৈরি করা দুটি কিন্তু আলাদা।

পর্নোগ্রাফি দেখার চরম ক্ষতি

1.মনে অশ্লীল ধারণা চেপে বসে। অসামাজিক কাজে আগ্রহ বাড়তে থাকে। পরিবার পরিজনের প্রতিও অশ্লীল মনোভাব সৃষ্টি হয়। আর এই মনোভাব যে একজন মানুষের কতটা সর্বনাশ করতে পারে তার ধরাণা সকলেরই রয়েছে।

2. পর্নোগ্রাফি দেখার নেশা ধরলে মেজাজ ক্রমশ খারাপ হতে থাকে। খিটখিটে স্বভাব এবং ছোটো ছোটো কারণে ঝগড়াঝাটি করার প্রবণতা বাড়তে থাকে। এমনকি মারপিট করার প্রবণতাও বাড়ে।

3.পর্নোগ্রাফির নেশা মস্তিষ্কে চাপ সৃষ্টি করে। সারাদিন ফোনে নিষিদ্ধ ভিডিও দেখতে দেখতে মানুষ ডিপ্রেশনে চলে যান। এর থেকে বেরিয়ে আসা বেশ কঠিন।

4.যাঁরা নিয়মিত পর্নোগ্রাফি দেখেন তাঁদের মধ্যে মদ এবং ড্রাগ নেওয়ার প্রবণতা শুরু হয় এবং তা ক্রমে বাড়তে থাকে। পরে তা মাত্রা ছাড়িয়ে যায়। একটা সময় পর এই ভয়ানক নেশাগুলির থেকে কিছুতেই বেরোনো সম্ভব হয়ে ওঠে না।

কীভাবে বুঝবেন যে আপনি পর্নগ্রাফির নেশায় আসক্ত হয়ে পড়েছেন?

1.বার বার পর্নোগ্রাফি দেখতে ইচ্ছে করে। কিছুতেই নিজেকে আটকে রাখতে পারেন না।

2.কোনও কারণে পর্ণগ্রাফি দেখা না হয়ে উঠলে শরীর অস্থির করে, মন আনচান করে। কোনও কাজেই মন বসাতে পারেন না। মনে মনে বেজায় রাগ হয়।

3.সারাদিন মাথায় পর্নোগ্রাফি ছবির ভিডিওর দৃশ্য ঘুরে চলেছে।

4.জীবনে যতই চড়াই উতরাই হোক না কেন কোনোকিছুকে গ্রাহ্য না করেই আপনি পর্নোগ্রাফি ভিডিও দেখে থাকেন।

5.পর্নোগ্রাফি দেখার জন্য সময় এবং অর্থ ক্রমাগত ব্যয় করেই চলেছেন। কাছে টাকা না থাকলে অস্থির হয়ে পড়ছেন।

6.অফিস কিংবা বাড়ির দরকারি কাজ স্থাগিত রেখে পর্ণগ্রাফি দেখে চলেছেন।

উপরের কারণগুলির মধ্যে দু চারটে মিলে গেলেই আপনি পর্নোগ্রাফিতে আসক্ত।

পর্নোগ্রাফির আসক্তি কীভাবে কমাবেন?

1.নিজে থেকে ভালো এবং সুস্থ হতে চাইলে স্মার্ট ফোন কিংবা ল্যাপটপ বা কম্পিউটারে পর্নোগ্রাফির সাইটগুলি ব্লক করে দিন।

2.একা না পারলে মনোবিদের সাহায্য নিন। লজ্জার কিছু নেই। রোগ সারাতে গেলে ডাক্তারের কাছে যেতেই হবে। তাঁকে সব কথা খুলে বলুন। তাঁর পরামর্শ অক্ষরে অক্ষরে পালন করুন।

3.চেষ্টা করুন পরিবার, বন্ধুবান্ধব, আত্মীয় স্বজনদের সঙ্গে সময় কাটাতে। বেড়াতে যান। খোলা হাওয়ায় মন পরিষ্কার হয়।

4.আর সবচেয়ে বড় কথা নিজের মনকে দৃঢ় করুন। নেশা কাটাতে গেলে সেটাই সবার আগে প্রয়োজন।

- Advertisement -spot_img

Latest news

- Advertisement -spot_img

Related news

- Advertisement -spot_img

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.