তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বরাবরই সোজা কথা বলার মানুষ। এবার তিনি রাজ্যপালকে নজিরবিহীন আক্রমণ করলেন। নারদ কাণ্ডে যে চার হেভিওয়েটকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তার পিছনে ধনকড়ের ভূমিকা রয়েছে বলেই দাবি করেই এই আক্রমণ করেছেন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। কল্যাণবাবু বলেছেন, “রাজ্যপালের ননামে সবাই থানার থানায় এফআইআর করুন। আজ ওনার কিছু হবে না। তিনি রাজ্যপাল তাই। তবে তিনি যখন রাজ্যপাল থাকবেন না, তখন ওনার এই প্রেসিডেন্সি জেলে জায়গা হবে।” এদিকে কল্যাণবাবুর এই মন্তব্য শুনে এবিষয়ে টুইটে দুঃখপ্রকাশ করেছেন ধনকড়। ট্যুইটে রাজ্যপাল লিখেছেন, “তিনি একজন তৃণমূল নেতা। তিনি একজন সাংসদ। তিনি এনজন আইনজ্ঞ। আমি তাঁর কথা শুনে বিস্মিত। তাঁর এই বক্তব্য পশ্চিমবঙ্গের মানুষের সংস্কৃতির সঙ্গে মেলে না।” জগদীপ ধনকরকে “সংবিধানের ঘাতক”, “রক্তচোষা” বলে কটাক্ষও করেছেন সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় । যা নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই বিতর্ক তৈরি হয়েছে।
কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই মন্তব্যের তীব্র নিন্দা করেছেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষ । তিনি বলেন, “উনি উন্মাদের মতো কথা বলছেন। দলেই ওনার কোনও গুরুত্ব নেই।” দিলীপ ঘোষকেও পালটা দিয়েছেন তৃণমূল সাংসদ। তিনি বলেন, “দিলীপ ঘোষ বদ্ধ উন্মাদ, অশিক্ষিত। অনেক বড় বড় কথা বলেছিলেন, হাত ভাঙবেন, পা ভাঙবেন। কী লাভ হল? সবাই ওনাকেই শুইয়ে দিল। উনিই এখন বিজেপির কাছে অবাঞ্চিত।”
রাজ্যপাল হওয়ার পর থেকেই জগদীপ ধনখড়ের সঙ্গে আদায়-কাঁচকলায় সম্পর্ক তৈরি হয়েছে রাজ্য সরকারের। একাধিকবার তাঁকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমালোচনা করতে দেখা গিয়েছে। ভোট পরবর্তী অশান্তি নিয়েও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে খোঁচা দিয়ে টুইট করে গিয়েছেন রাজ্যাপল। সেই সংঘাতের আবহেই এবার নতুন সংযোজন নারদ কাণ্ড। নারদ তদন্তে চার নেতা-মন্ত্রী এবং এক IPS অফিসারের বিরুদ্ধে যে চার্জশিট জমা দিয়েছে CBI, তাতেও বেনজির ভাবে সাক্ষী তালিকায় নাম রয়েছে রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের। আদালত সূত্রে খবর, মোট ৬১ জন সাক্ষীর তালিকায় ৫২ তম সাক্ষী হিসেবে রাখা হয়েছে বাংলার রাজ্যপালকে। তার মধ্যেই কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই তীব্র আক্রমণ পরিস্থিতি আরও বেগতিক করে তুলবে বলেই মনে করছেন রাজনৈতি বিশেষজ্ঞরা।