27 C
Kolkata
27 C
Kolkata
শনিবার, মার্চ 25, 2023

স্বল্প পুঁজিতে শোল মাছ চাষ করে অধিক উপার্জন করে জীবিকা নিরবাহন করুন

শোল মাছ (fish farming) বাজারের দামি মাছ। এই মাছ দামি হলেও চাষে খরচ খুবই কম।  শোল মাছ সব ধরনের দুর্যোগ যেমন খরা, অতিবৃষ্টি কিংবা প্রতিকূল পরিস্থিতি সবকিছু সহ্য করতে পারে- যা অন্য মাছের জন্য কঠিন। মা শোল মাছই নিজেদের মতো করে ডিম নার্সিং ও পোনা লালন করে। শত্রু মাছের কবল থেকে নিজেই ঠেকায়। এই নিবন্ধে শোল মাছ চাষ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো,

পুকুর প্রস্তুতি :

পুকুরে শোল মাছ চাষ করার জন্য প্রথমে আপনাকে পুকুরের জল সম্পূর্ণ শুকয়ে নিতে হবে । এর পরে দেখা যাবে পুকুরের তলায় এক ধরনের ঘাস জন্মায় । এই ঘাস জন্মানোর পরে পুকুর জল দিয়ে ভরাট করতে হবে। এরপর জলের নীচে এসব ঘাস ধীরে ধীরে বড় হতে থাকবে এবং পরবর্তীতে শোল মাছ এই ঘাসের নিচে আশ্রয় নেয়। যেই পুকুরে শোল চাষ হবে সেই পুকুরে কচুরীপানা অথবা কলমি লতা থাকলে ভাল কারন শোল মাছ আড়ালে আবডালে থাকতে পছন্দ করে। তবে খেয়াল রাখতে হবে কচুরীপানায় যেন পুকুর ভরে না যায়। পুকুরের চারদিকে কমপক্ষে ৫ ফুট উচ্চতায় জাল দিয়ে বেড় দিত হবে। অন্যথায় বর্ষাকালে শোল মাছ লাফিয়ে চলে যাবে।

পোনা মজুদ:

প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে শোল মাছের পোনা উৎপাদন করা খুবই সহজ। বৈশাখ মাস শোল মাছের প্রজনন মৌসুম। বৈশাখ মাসের প্রথম থেকে শোল মাছ বাচ্চা দিতে শুরু করে। বাচ্চাগুলো এক ঝাঁকে থাকে। সেই সময় পুকুর থেকে সপ্তাহখানেক বয়সের বাচ্চা সংগ্রহ করতে হবে।

যদি পোনা না পাওয়া যায় তাহলে বড় শোল মাছ সংগ্রহ করে পুকুরে ছেড়ে দিতে হবে।  একক ভাবে প্রতি শতাংশে ১০ টি দেওয়া যেতে পারে আর মিশ্র পদ্ধতিতে চাষের জন্য প্রতি শতাংশে ৪টি । একটি প্রাপ্ত বয়স্ক শোল মাছ লম্বায় ২.৫-৩ ফিট হতে পারে। চৌবাচ্চায় বা ফাইবারের ট্যাংকিতে এই মাছ চাষ করা যাবে।

খাদ্য :

শোল মাছ সাধারনত খোল বা কুড়া দিয়ে বানানো খাবার খায় না। ছোট মাছই এর প্রধান খাদ্য। পোনা মাছের প্রিয় খাদ্য শুটকির গুঁড়ো তাই পোনা মাছকে খাবার হিসেবে চিংড়ি শুটকি ভালভাবে গুঁড়ো করে দিতে হবে। এভাবে নার্সারি পুকুরে ১৫ দিন খাওয়ানোর পর পোনাগুলো প্রায় ২/৩ ইঞ্চি সাইজ হবে। ২/৩ ইঞ্চি পোনা মজুদের পর খাদ্য হিসেবে কার্প জাতীয় মাছের ধানীপোনা দেয়া যেতে পারে সাথে ছোট ছোট ব্যাঙ বা ব্যাঙাচি দেয়া যেতে পারে। এরপর পোনাগুলোকে চাষের জন্য অবমুক্ত করতে হবে। আর বড় মাছের জন্য ছোট ছোট মাছ, তবে মরা টাটকা মাছ খেতে দিলে এরা খুব খায়।

মিশ্র চাষ :

মিশ্র মাছের সঙ্গে শোল মাছের চাষ করা যেতে পারে। ৬ মাসে একেকটি শোল মাছের ওজন ৭০০-১০০০ গ্রাম হওয়ার সম্ভাবনা আছে। শোল মাছের মিশ্র চাষ করে কৃষকবন্ধুরা দারুন লাভ করতে পারেন | ছোট অবস্থায় এরা জু প্লাংকটন খেয়ে জীবন ধারন করে থাকে। মাছ একটু বড় হলে পুকুরের দেশি ছোট মাছ ও ছোট কার্প জাতীয় মাছ খেয়ে বড় হতে থাকে। এভাবে চাষ করলে খামারি লাভবান হতে পারবে না। কারন শোল মাছ একটু বড় হলে পুকুরের অন্য মাছ খেয়ে সাবাড় করে থাকে । পুকুরে অন্য মাছ কমার কারনে খামারী খতির স্মুখিন হয়ে থাকে।

রোগবালাই ও দমন :

শীতকালে শোল মাছে ক্ষত রোগ দেখা দেয়। রোগাক্রান্ত মাছ পুকুর থেকে তাৎক্ষণিকভাবে তুলে ফেলতে হবে। ১০ লিটার জলে ১০০ গ্রাম লবণ গুলে লবণমিশ্রিত জলে রোগাক্রান্ত মাছ ৫  থেকে ১০ মিনিট ডুবিয়ে রেখে অত:পর পুকুরে ছেড়ে দিতে হবে।

এ রোগ নিরাময়ের জন্য ৭-৮ ফুট গভীরতায় প্রতি শতাংশ জলাশয়ে ১ কেজি হারে পাথুরে চুন ও ১ কেজি হারে লবণ প্রয়োগ করা হলে আক্রান্ত মাছ দুই সপ্তাহের মধ্যেই আরোগ্য লাভ করে।ক্ষত রোগে আক্রমণের আগেই প্রতি বছর আশ্বিন মাসের শেষে কিংবা কার্তিক মাসের প্রথম দিকে পুকুরে শতাংশ প্রতি ১ কেজি হারে পাথুরে চুন ও ১ কেজি হারে লবণ প্রয়োগ করা হলে সাধারণত আসন্ন শীত মৌসুমে ক্ষত রোগের কবল থেকে মাছ মুক্ত থাকে।

- Advertisement -spot_img

Latest news

- Advertisement -spot_img

Related news

- Advertisement -spot_img

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.