কলকাতা মিডিয়া ওয়েব ডেস্কঃ
বিস্মৃতিপ্রবন বাঙালী তাঁকে মনে রেখেছে মহানায়ক হিসেবে। এই মহানায়ক হওয়ার পথটি খুব একটা সুগম ছিল না। এই পথ চলাতে তাঁকে প্রতি মুহুর্তে অনেক অসুবিধার সম্মুখীন হতে হয়েছে। যে পথ দিয়ে তিনি হেঁটেছেন সেই পথ মোটেও ফুল বিছানো ছিলনা, প্রতি মুহুর্তে পায়ে কাঁটা ফুটে রক্তাক্ত হতে হয়েছে তাঁকে। প্রথম জীবনে উত্তম কুমার পরিচিত ছিলেন অরুণ কুমার চটোপাধ্যায় হিসাবে। তিনি আজকের দিনে কলকাতায় জন্মগ্রহণ করে ছিলেন। তিনি কলকাতার সাউথ সুবার্বন স্কুল ম্যাট্রিক পাশ করেন। পরবর্তী কালে কলকাতার পোর্টে চাকরি নিয়ে কর্ম জীবন শুরু করেন। সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে এসে চলচ্চিত্র জগতে প্রতিষ্ঠা পেতে অনেক পরিশ্রম করতে হয়েছে তাঁকে।
উত্তম কুমারের মুক্তি প্রাপ্ত চলচ্চিত্র ছিল দৃষ্টিদান। বসু পরিবার চলচ্চিত্রে তিনি প্রথম দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। এর পরে সাড়ে চুয়াত্তর মুক্তি পাবার পরে তিনি চলচ্চিত্র জগৎ এ স্থায়ী আসন লাভ করেন। সাড়ে চুয়াত্তর ছবিতে তিনি প্রথম অভিনেত্রী সুচিত্রা সেনের বিপরীতে অভিনয় করেন । এই ছবির মাধ্যমে বাংলা চলচ্চিত্র জগতে সবচেয়ে জনপ্রিয়তায় ও সফল উত্তম -সুচিত্রা জুটির সূত্রপাত হয় ।
তা একত্রে অনেকগুলি হিট সিনেমা দর্শকদের উপহার দেন । তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল হারানো সুর , পথে হল দেরী , সপ্তপদী , চাওয়া পাওয়া , বিপাশা , জীবন তৃষ্ণা , সাগরিকা ইত্যাদি ।উত্তম কুমার বেশ কয়েকটি হিন্দি চলচ্চিত্রেও অভিনয় করেন । তারমধ্যে ছোটিসি মুলাকাত , অমানুষ , আনন্দ আশ্রম অন্যতম ।তাঁর জীবনের শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্রটি হল সত্যজিৎ রায় পরিচালিত নায়ক সিনেমাটি ।তিনি পরিচালক হিসেবেও সফল হয়েছেন । কলঙ্কিনী কঙ্কাবতী , বনপলাশীর পদাবলী ও শুধু একটি বছর ছবির সাফল্য তাই প্রমাণ করে ।
উত্তম কুমার ১৯৮০ সালের ২৪শে জুলাই মাত্র ৫৩ বছর বয়সে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে কলকাতার বেলভিউ নার্সিংহোমে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন । তার মৃত্যুর প্রায় চল্লিশ বছর পরেও তিনি আপামর বাঙালীর কাছে এখনও ম্যাটিনি আইডল । তাঁকে নিয়ে এই উন্মাদনা বাঙালী আজীবন বহন করছে , করবেও ।