ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত মিলিক সুলতানপুর থেকে ধৃত চিনা অনুপ্রবেশকারী হান জুনওয়ের বিষয়ে আরও তথ্য পেয়েছে জেলা পুলিশ। জানা গিয়েছে, এই চিনা নাগরিকের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের থেকে ইংরেজি স্নাতক ডিগ্রি রয়েছে। তাতেই তাজ্জব পুলিশ। সন্দেহ সে চিনা গুপ্তচর। তবে কি ভারতে চরবৃত্তির উদ্দেশ্যেই হানের এই ইংরাজি শিক্ষা? ভাবাচ্ছে তদন্তকারীদের। এছাড়া সাইবার বিশেষজ্ঞ হিসেবে সে অতি দক্ষ। ভারতে অনুপ্রবেশের আগে বাংলাদেশের যে চিনা বন্ধুর আশ্রয়ে ছিল হান, তার খোঁজ চালাচ্ছে সে দেশের পুলিশ।
প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে যে গত এক বছরে হান চুনওয়েই প্রায় ১ হাজার ৩০০টি ভারতীয় সিম কার্ড ব্যবহার করে ভারতের নানা তথ্য চিনে পাঠিয়েছিল। এ দেশের নাগরিকদের প্রতারিত করে ব্যাঙ্ক জালিয়াতি করেছে বলে জানা গিয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার কালিয়াচক থানার ভারত বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী মিলিক সুলতানপুর এলাকায় ধরা পড়ে হান। জেরায় উঠে আসে, বাংলাদেশের চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ভারতে প্রবেশ করেছিল সে। অনুপ্রবেশের পরেই বিএসএফের হাতে ধরা পড়ে এই ব্যক্তি। তার কাছ থেকে ভারতীয় মোবাইলের সিম,বাংলাদেশি মোবাইলের সিম,এবং চিনা মোবাইলের সিম, ল্যাপটপ বেশ কিছু ডিভাইস উদ্ধার হয়।
বিএসএফ দক্ষিণ বেঙ্গল ফ্রন্টিয়ার জারি করা একটি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “হান চুনওয়েই একজন মোস্ট ওয়ান্টেড ক্রিমিনাল। ভারতে বসেই ভুয়ো নথি ব্যবহার করে ১৩০০টি সিম কার্ড তুলেছিল। আন্ডারগার্মেন্টে এই সিম লুকিয়ে তিনি ও তার সহকারীরা সেই সব তথ্য চিনে পাঠাতেন।”
হানের আরেক সঙ্গী সান জিয়াং লখনউ থেকে গ্রেপ্তার হয়েছিল দিন কয়েক আগেই। লখনউ এটিএস (ATS) তাকে গ্রেপ্তার করে। এবার ‘চরবৃত্তি’ যোগে আরেক চিনা নাগরিকও তদন্তকারীদের স্ক্যানারে। সে বাংলাদেশের নাগরিক। মালদহে অনুপ্রবেশের আগে বাংলাদেশের চাপাই নবাবগঞ্জে যার আশ্রয়ে দিনকয়েক কাটিয়েছে হান, তার খোঁজ করছে সে দেশের পুলিশ। হানের ল্যাপটপ বাজেয়াপ্ত হলেও তার পাসওয়ার্ড জানতে এখনও পারেননি সাইবার বিশেষজ্ঞরা। আর তা থেকেই ধারণা, সাইবার বিষয়ে অতি দক্ষ হান হয়তো এইভাবেই ভারতে নাশকতার ছক কষছিল।
তদন্তকারীদের দাবি, ভারতে সাইবার হানা চালানোর প্রস্তুতি নিতে এদেশে ঢুকেছিল সে। হানের এক চিনা বন্ধু রয়েছে বাংলাদেশে। তার সাহায্যেই সেদেশের চাঁপাইনবাবগঞ্জ দিয়ে সীমান্ত পেরিয়ে অবৈধ ভাবে ভারতে প্রবেশ করে।