সময় বড় শিক্ষক। সেটা এবার বোঝা যাচ্ছে। নির্বাচনের আগে লাইন দিয়ে বিজেপি-র হাওয়ায় নিজেদের ভাসিয়ে তৃণমূল ছেড়েছিলেন বহু তৃণমূল নেতা-মন্ত্রী-সাংসদ-বিধায়ক। একুশের নির্বাচনের আগে টিকিট না পেয়ে ‘অভিমানে’ দলত্যাগ করেছিলেন তৃণমূলের এককালের ‘বিশ্বস্ত সৈনিক’ সোনালি গুহ । যোগ দিয়েছিলেন গেরুয়া শিবিরে। কিন্তু তাঁকে টিকিট দেয়নি বিজেপিও। মাস কয়েকের মধ্যেই তাই উলটো সুর সাতগাছিয়ার প্রাক্তন বিধায়কের গলায়। বিজেপি ছেড়ে ফের তৃণমূলে ফেরার ইচ্ছাপ্রকাশ করে দীর্ঘ টুইট করলেন তিনি। সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে ক্ষমাও চাইলেন।
টুইটারে দলত্যাগী নেত্রী লেখেন, “সম্মানীয়া দিদি, আমার প্রণাম নেবেন। আমি সোনালি গুহ, অত্যন্ত ভগ্ন হৃদয়ে বলছি যে আমি আবেগপূর্ণ হয়ে চরম অভিমানে ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে অন্য দলে গিয়েছিলাম। যেটা ছিল আমার চরম ভুল সিদ্ধান্ত। কিন্তু সেখানে নিজেকে মানিয়ে নিতে পারিনি। মাছ যেমন জল ছাড়া বাঁচতে পারে না, তেমনই আমি আপনাকে ছাড়া বাঁচতে পারব না। দিদি আমি আপনার কাছে ক্ষমাপ্রার্থী, দয়া করে আমাকে ক্ষমা করে দিন। আপনি ক্ষমা না করলে আমি বাঁচব না। আপনার আঁচলের তলে আমাকে টেনে নিয়ে, বাকি জীবনটা আপনার স্নেহতলে থাকার সুযোগ করে দিন। ধন্যবাদান্তে, আপনার স্নেহের সোনালি গুহ।”
সোনালি গুহ আগামী মঙ্গলবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রয়াত মেজ ভাই অসীম বন্দ্যোপাধ্যায়ের পারলৌকিক কাজে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ি যাবেন বলে জানিয়েছেন। বলেছেন, আমি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ট্যুইট করেছি। কিন্তু তিনি এখনও কোনও উত্তর দেননি। তিনি মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর অনেক কাজ। সময় পেলে উত্তর দেবেন আশা করছি।
সোনালি গুহর বিজেপি-র বিরুদ্ধে অভিযোগ, বিজেপি তাঁকে ব্রাত্য করে রেখেছে। এভাবে বিজেপিতে তিনি থাকতে চান না। নির্বাচনের সময় বিজেপি তাঁকে বলে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সভায় কুৎসা করার জন্য বলেছিল। তিনি সেই কাজ করতে সম্মত হননি। তিনি মনে করেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কোনও কুৎসা নেই। যদিও সোনালি গুহ বিজেপিতে যোগ দিয়ে বলেছিলেন, “আমি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সম্পর্কে অনেক কিছু জানি সেটা প্রচারে বলবো।”
এনিয়ে বিজেপির তরফে শমীক ভট্টাচার্য বলেন, “যে যেখানে শান্তি পাবে, সেখানেই যাক। এ বিষয়ে আমাদের কিছু বলার নেই।” তৃণমূলের তরফে যদিও এখনও এনিয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি। তবে তৃতীয়বার ক্ষমতায় আসার পরই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, কেউ ফিরতে চাইলে, ফিরতেই পারে। এক্ষেত্রে তাই ঘাসফুল শিবিরে সোনালি গুহর প্রত্যাবর্তনের সম্ভাবনা থেকেই যাচ্ছে।