ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের (Cyclone Yaas) মোকাবিলায় প্রস্তুত রাজ্য সরকার ৷ রাজ্যে দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রয়োজনে সেনা নামানো হবে বলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি জানিয়েছেন। আসন্ন ঘূর্ণিঝড় যশ মোকাবিলায় আজ নবান্নে প্রশাসনের কর্তাদের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের তিনি বলেন, সবাই সুরক্ষিত জায়গায় থাকুন। প্রয়োজন হলে সেনা নামানো হবে। সব এজেন্সির সঙ্গে কথা বলে সবাইকে তৈরি রেখেছি।’ পরিস্থিতি মোকাবিলায় একাধিক সংস্থা কাজ করছে।
মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, ‘পূর্ণিমার ভরা কোটালের কারণে জলস্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। ৭৪ হাজার আধিকারিক ও কর্মী দুর্যোগ মোকাবিলায় কাজ করছেন। প্রায় ২ লক্ষ পুলিশকর্মীকে কাজে লাগানো হয়েছে।’পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, উত্তর ২৪ পরগনার জেলাশাসকদের সঙ্গে কথা বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। মঙ্গলবার নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে মমতা বলেন, ‘প্রায় ৯ লাখ মানুষকে নিরাপদে সরানো হয়েছে। ২৪ ঘণ্টা পরিস্থিতির দিকে নজর রাখা হচ্ছে। ব্লকে ব্লকে কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে’। প্রয়োজনে সেনা নামানো হবে বলে জানালেন মুখ্যমন্ত্রী। মুখ্যমন্ত্রী আরও জানান, দুর্যোগ মোকাবিলায় ৭৪ হাজার কর্মী থাকবেন। প্রায় ২ লাখ পুলিশকর্মী কাজ করবেন।
গতবছর আমফান বিপর্যয় মোকাবিলায় সেনার সাহায্য নেওয়ার ব্যাপারে অনেক দেরি করেছিল রাজ্য সরকার। তা নিয়ে রাজ্যে বিরূপ সমালোচনার ঝড় ওঠে। সে কারণেই এবার আগাম সেনাকে কাজে লাগানোর কথা মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করে দিলেন বলে মনে করা হচ্ছে।
ধেয়ে আসছে অতি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ইয়াস । মঙ্গলবার ৪টে পর্যন্ত ওডিশার বালেশ্বর থেকে ৩৭০ কিমি দূরে রয়েছে ইয়াস। ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় একাধিক ব্যবস্থা নিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার । রাজ্যের ৯ জেলায় বন্যার সতর্কতা জারি করা হয়েছে। দুই মেদিনীপুর, মুর্শিদাবাদ, হাওড়া, হুগলি, দুই বর্ধমানের জেলাশাসকদের সতর্ক করা হয়েছে৷ এছাড়াও দক্ষিণ ও উত্তর ২৪ পরগনার নদী তীরবর্তী এলাকা ও নদীপাড়ের নীচু এলাকা থেকে সরানো হয়েছে লক্ষ-লক্ষ বাসিন্দাকে। ত্রাণ শিবিরগুলিতে নিয়ে গিয়ে রাখা হয়েছে তাঁদের। করোনাকালে ত্রাণ শিবিরগুলি থেকে যাতে কোনওভাবে সংক্রমণ ছড়িয়ে না পড়ে সেব্যাপারে সজাগ দৃষ্টি রাখা হচ্ছে। ত্রাণ শিবিরগুলিতে মাস্ক ও স্যানিটাইজার রাখা হয়েছে।
আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, বাংলায় ইয়াসের দাপট সবচেয়ে বেশি পড়বে পূর্ব মেদিনীপুর জেলায়। আছড়ে পড়ার সময় পূর্ব মেদিনীপুরে ঝড়ের বেগ হতে পারে ঘণ্টায় ১৪৫ কিমি। দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ঝড়ের বেগ হবে ঘণ্টায় ৯০-১০০ কিমি। কলকাতা, হাওড়া, হুগলিতে ঝড়ের বেগ হতে পারে ঘণ্টায় ৭০-৮০ কিমি। তবে, আমফানের মতো প্রভাব এই রাজ্যে পড়বে না বলেই মনে করা হচ্ছে।